জার্মানিতে চলমান ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে বেশ কিছু নতুন রেকর্ড দেখেছে ফুটবল বিশ^। স্পেন বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ফাইনালের আগে হওয়া সেই রেকর্ডগুলো এখানে তুলে ধরা হলো :
লামিন ইয়ামাল : সর্বকনিষ্ট খেলোয়াড় ও গোলদাতা
স্পেন টিনএজার সেনসেশন লামিন ইয়ামাল ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ইউরোর এবারের আসরে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই ইতিহাস রচনা করেছেন। ১৬ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে মাঠে নেমে তিনি ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে খেলার রেকর্ড গড়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ২০২০ সালে পোল্যান্ডের কাসপার কোজোলভস্কির করা ১৭ বছর ২৪৬ দিনে খেলার আগের রেকর্ডটি ভঙ্গ করেছেন।
বার্সেলোনার এই তরুণ তুর্কি এরপর ইউরোতে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে স্পেনের ২-১ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে ১৬ বছর ৩৬২ দিন বয়সে গোল করে ইয়ামাল এই রেকর্ড গড়েন।
সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় পেপে :
পর্তুগালের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার পেপে এবারের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছেন। চেক প্রজাতান্ত্রের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে খেলার দিন পেপের বয়স ছিল ৪১ বছর।
ফ্রান্সের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজিত হয়ে পর্তুগালের বিদায়ের দিন পেপের বয়সী ছিল ৪১ বছর ১৩০ দিন। এই বয়সে প্রায় সব ফুটবলার অনেক আগেই অবসর জীবনের স্বাদ পেয়ে যায়।
পোর্তোর এই সেন্টার-ব্যাক নতুন এই রেকর্ড গড়তে হাঙ্গেরির গোলরক্ষক গাবোর কিরালিকে পিছনে ফেলেছেন। ২০১৬ ইউরোতে বেলজিয়ামের বিপক্ষে খেলার সময় কিরালির বয়স ছিল ৪০ বছর ৮৬ দিন, যা এ পর্যন্ত সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে তালিকায় তাকে শীর্ষে রেখেছিল।
লুকা মড্রিচ : সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোলের রেকর্ড :
ইতালির বিরুদ্ধে ক্রোয়েশিয়ার এবারের আসরের শেষ ম্যাচে গোল করার মাধ্যমে সবচেয় বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে গোলের রেকর্ড গড়েছেন লুকা মড্রিচ।
৩৮ বছর ২৮৯ দিন বয়সে তিনি গোল করার কৃতিত্ব দেখান। আগের রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রিয়ান ইভিচা ভাস্টিকের। ২০০৮ ইউরোতে যখন ভাস্টিক গোল করেছিলেন তখন তিনি মড্রিচের তুলনায় ৩২ দিন কম বয়সী ছিলেন।
গ্রুপ পর্ব থেকেই ক্রোয়েশিয়ার বিদায় নিশ্চিত হয়। এর মাধ্যমে ইউরো ক্যারিয়ারেরও ইতি টেনেছেন অভিজ্ঞ রিয়াল মাদ্রিদ তারকা মড্রিচ।
রোনাল্ডোর ষষ্ঠ ইউরো :
৩৯ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো আশা করেছিলেন সবচেয়ে বেশী বয়সী গোলদাতা হিসেবে হয়তো তার নামই সবার আগে উঠে আসবে। কিন্তু ইউরোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৪ গোল করা পর্তুগীজ এই সুপারস্টার তার রেকর্ডকে সমৃদ্ধ করতে পারেননি। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে পর্তুগালের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। এর আগে শেষ ষোলতে তিনি স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
যদিও রোনাল্ডো এক বিরল রেকর্ড গড়েছেন। ২০০৪ সালে প্রথমবারের মত ইউরোতে খেলতে আসা রোনাল্ডো এনিয়ে ষষ্ঠ ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে খেলার নতুন রেকর্ড গড়েছেন। এ পর্যন্ত সর্বমোট ৩০টি ম্যাচ খেলেছেন। অন্য যেকোন খেলোয়াড়ের তুলনায় যা অন্তত সাত ম্যাচ বেশী।
নেদিম বারামি : দ্রুততম গোল
ইতালির বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে মাত্র ২৩ সেকেন্ডে দলকে এগিয়ে দিয়ে ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়েছেন আলবেনিয়ার নেদিম বারামি। এর আগে ২০০৪ সালে গ্রীসের বিরুদ্ধে রাশিয়ার দিমিত্রি কিরিচেনকো ৬৭ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন যা এতদিন পর্যন্ত ইউরোতে দ্রুততম গোলের রেকর্ড ছিল।
ইতালির কাছে প্রথম ম্যাচে আলবেনিয়া অবশ্য ২-১ গোলে পরাজিত হয়।
তুরষ্কের মেরিহ ডেমিরাল এরপর অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ষোলর ম্যাচে মাত্র ৫৭ সেকেন্ডে গোল করে দ্বিতীয় দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়েছেন।
সূত্র: বাসস